এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি’র ৮ টি সুবিধা

এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি কী?
এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি হলো একাডেমিক কার্যক্রম এর বাহিরে এমন কিছু কার্যক্রম যা একজন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন দক্ষতা অর্জন ও জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধকরণে সহায়তা করে। বিশেষ করে একজন শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি। যেমন : ডিবেটিং টিম,কালচারাল ক্লাব,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে।
এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি’র ৮ টি সুবিধা
১। নিজের সুপ্ত প্রতিভার সাথে পরিচয় লাভের সুযোগঃ
প্রত্যেকটি মানুষের ভিতরে সুপ্ত থাকে তার বিশেষ কিছু প্রতিভা। কিন্তু অনেক সময়েই সেই প্রতিভাসমূহ সুপ্ত অবস্থায় থেকে যায় প্রয়োজনীয় প্লাটফর্ম এর অভাবে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী যুবসংগঠন সমূহে যোগদান করার মাধ্যমে নতুন নতুন কাজ সম্পর্কে জানা যায়। সেসব কাজে নিজেকে যুক্ত করার মাধ্যমে নিজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা প্রতিভার বিকাশ ঘটানো সম্ভব এবং নিজের কার্যক্ষমতা সম্পর্কে অবগত হওয়া যায় খুব সহজেই।
২। অন্তর্মুখী ব্যক্তিত্ব থেকে বহির্মুখী ব্যক্তিত্ব তে পরিণত হওয়াঃ
পৃথিবী তে প্রত্যেক মানুষের মাঝে রয়েছে ভিন্নতা। কেউ হয় অন্তর্মুখী আবার কেউবা বহির্মুখী। তবে বর্তমান যুগের চাকরির জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে প্রত্যেক মানুষের প্রয়োজন বহির্মুখী হওয়া। এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি তে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে নিজেকে বহির্মুখী একজন ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসমূহে কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পক্ষের সাথে কথোপকথন এ জড়াতে হয় এবং যোগাযোগ স্থাপন করতে হয় কাজের প্রয়োজনে। এতে করে নিজেকে অবিরত সকলের সম্মুখে প্রকাশ করার মাধ্যমে নিজের সকল জড়তার অবসান ঘটে। এতে একজন অন্তর্মুখী মানুষ নিজেকে তুলে ধরতে পারে একজন বহির্মুখী মানুষ হিসেবে।
৩। যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি পাওয়াঃ
চাকরির এই যুগে যেকোনো সেক্টরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে চাই যথাযথ যোগাযোগ দক্ষতা। জব সার্কুলার এর ‘রিকোয়ারমেন্টস’ অংশে ‘কমিউনিকেশন স্কিল বা যোগাযোগ দক্ষতা’ কে খুব গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। যেহেতু সকল প্রতিষ্ঠান এ কাজ করতে হলে প্রতিষ্ঠান এর ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন পক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে হয়, সেহেতু প্রত্যেক ব্যক্তির মাঝে যোগাযোগ দক্ষতা গড়ে তোলা অতীব জরুরি। বিভিন্ন যুব সংগঠন এ অংশ নেয়ার মাধ্যমে কাজের প্রয়োজনে সংগঠনের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন পক্ষের সাথে অনবরত যোগাযোগ রক্ষা করতে হয় যা যোগাযোগ দক্ষতা গড়ে তুলতে ভীষণ সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৪। জনসম্মুখে বক্তব্য উপস্থাপনের দক্ষতা গড়ে ওঠাঃ
এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি তে নিজেকে সংযুক্ত করার মাধ্যমে পাবলিক স্পিকিং স্কিল গড়ে তোলা সম্ভব। জনসম্মুখে যেকোনো বিষয়ে বক্তব্য রাখা খুব একটা সহজ বিষয় নয়। অনেকেই এতে বাধার সম্মুখীন হয়। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এ কাজ করার ফলে প্রায়শই সভা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনুষ্টানে বক্তব্য প্রদানের ফলে জনসম্মুখে বক্তব্য উপস্থাপনের ভীতি দূর হয়।
৫। বিভিন্ন ছোট-বড় অনুষ্ঠান আয়োজন এর আদ্যোপান্ত সম্পর্কে জ্ঞান লাভঃ
একজন চাকুরীজীবিকে তার প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ে সভা বা সেমিনার আয়োজন করার প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে অনুষ্ঠান আয়োজনের দক্ষতা থাকা জরুরী। একাডেমিক কার্যক্রমের বাহিরে একজন শিক্ষার্থী বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এ অংশ নিয়ে এই দক্ষতা খুব সহজেই অর্জন করতে পারে।
৬। দেশ বিদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সান্নিধ্য লাভ করাঃ
এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি একজন শিক্ষার্থীকে দেশ বিদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে সাক্ষাত করিয়ে দেয়। বিভিন্ন যুব সংগঠন বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ছোট বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। সেসব অনুষ্ঠানে অতিথি বা বক্তা হয়ে অংশ নেন দেশ বিদেশের নামকরা ব্যক্তিবর্গ। এতে একজন শিক্ষার্থী যে কিনা এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিতে নিজেকে যুক্ত করে, সে সুযোগ পেয়ে যায় সেসকল ব্যক্তিবর্গের সাথে সাক্ষাত করার। এরই সাথে জেনে নিতে পারে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতাসমূহ।
৭। সমাজের কাছে নিজের পরিচিতি প্রতিষ্ঠা করাঃ
নিজের পরিচিতি কে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি। বিভিন্ন যুব সংগঠন এর সাথে যুক্ত হয়ে দেশের যুবসমাজের জন্য বিভিন্ন কাজে নিজেকে নিয়োজিত করার ফলে সমাজে নিজের পরিচিত প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয় একজন শিক্ষার্থী।
৮। জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ হওয়াঃ
একাডেমিক কার্যক্রম এর বাহিরে এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি তে নিজেকে যুক্ত করার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী নিজের জ্ঞানের পরিধি-কে আরো বিস্তৃত করতে সক্ষম হয়। শুধু তাই নয়, বর্তমান চাকরির বাজারর যেসকল দক্ষতা থাকা একজন শিক্ষার্থীর জন্যে খুবই জরুরি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এর সাথে কাজ করতে গিয়ে সে অর্জন করে নিতে পারে সেসকল প্রয়োজনীয় দক্ষতা।
More From Author
- None Found