নিছক একটি গল্প – Nishat Munira Annesha : 1st Place Winner

জানালার কাঁচ ঝাপসা হয়ে আছে। ঝমঝম বৃষ্টি দেখতে দেখতে চোখটাও কেমন ভিজে আসছে।তুমি নেই কতদিন হল বল তো?সবার হিসাবে এক বছর। আমার মনের খাতায় কয়েক যুগ।কলিং বেল বেজে উঠলে এখনো চমকে উঠি। কিন্তু দৌঁড়ে গিয়ে দরজা খোলার আগ্রহ আর নেই।তোমার কাপড়ের ড্রয়ার আর আলনাটাও রয়েছে আগেরই মত।মা এখন আর সন্ধ্যা হলেই চা বানানোর তাড়া পায় না কারো কাছ থেকে।অভিমান করে না খেলেও কেউ আর ধমকে খাইয়ে দেয় না এখন।ঈদের দিন পায়েস আর রান্না করে না মা।রাত বিরাতে কেউ আর হুট করে দেখতে আসে না আমি ঘুমিয়েছি কিনা।আমিও আর অপেক্ষা করি না।আমার জন্য কি এনেছ বলে ছুটে জড়িয়ে ধরি না কাওকে।ভেবছিলাম তুমি ছাড়া আমি এক দিনও চলতে পারব না।কিন্তু দেখ সব চলছে আগের মত ঠিকঠাক।তুমি ছাড়া জীবনে কোন কিছু বদলায় নি বাইরের পৃথিবীতে।স্কলারশিপ এর টাকায় মায়ের জন্য শাড়ি কিনি কিন্তু তোমার পাঞ্জাবির টাকা জমিয়ে রাখছি, তোমার নামে একটা স্কুল করব বলে।বাবা আমরা তো আছি আগের মতই কেবল মাঝে মাঝে মনের ভেতরটা আচমকা ফাঁকা হয়ে যায়।নীরব দু’ ফোঁটা অশ্রুকে আলগোছে আড়াল করি।ভয় পেও না মাটির ঘরে একা।আমার মনের একটা অংশ রয়েছে তোমার সাথে যত্নে রেখো।যেদিন তোমার কাছে আসব সময় হলে,সেদিন তোমাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদব, ধমক দিয়ে কিন্তু থামাতে পারবে না আমায়।
কাঁধে হাতের স্পর্শ পেয়ে ঘুরে তাকায় রায়ান।বাবা দাঁড়িয়ে আছেন হাসিমুখে। “কি রে আবার কোন গল্প লিখছিস নাকি??” হাসিমুখে প্রশ্ন করেন আজমল সাহেব।রায়ান লজ্জা পেয়ে নিচে তাকিয়ে বলে “হ্যাঁ। একটা গল্প লিখেছি।” আজমল সাহেব রায়ান কে জড়িয়ে ধরে বলেন ”বলিস না এই গল্পেও বাবা মারা গিয়েছেন”।রায়ান হেসে ফেলে।”যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি তাকে হারানোর ভয়টাও তো বেশি বাবা।”
Written By : Nishat Munira Annesha
Institution : Mymensingh Girls’ Cadet College
More From Author
- সন্ধ্যাতারা – Homira Anjum : 5th Place Winner
- শিকার – Ahmadullah Shaiyan : 5th Place Winner
- ধন্যবাদ, বাবা – Noman Ahmed : 2nd Place Winner