চশমা

বিনা নোটিশে যা আমাদের নাকের উপর সারাজীবনের জন্য জায়গা করে নেয় তাকে আমরা বলি “চশমা”।
এই চশমা নিয়ে কত যে বিড়ম্বনা পোহাতে হয় তা শুধুমাত্র যারা এই চশমা ছাড়া অচল তারাই বুঝে।
অনেকে আবার মনে করে চশমা দেয়া বিশাল ফ্যাশন।আমার খুব দেখতে ইচ্ছা করে উনারা কারা যারা এই নাকের ঢগায় অযাচিত বস্তুটাকে ফ্যাশন ভাবে।
সৃষ্টিকর্তার দেয়া চোখ দুটো যখন এই গ্লাসের মধ্যে আটকে যায় আর দুর্ভাগ্যবশত যখন সামনের এই কাচের টুকরাটা ছাড়া কিছুই স্পষ্ট দেখা যায়না তখনই নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায় মানুষটা মনে হয়।
যদি নিজের কথায় বলি, তাহলে প্রথমেই বলতে হবে আমার কিন্ডারগার্টেন স্কুলের কোনো ফ্রেন্ডই আমাকে প্রথম দেখায় চিনতে পারেনা শুধুমাত্র এই চশমার কারনে। তারা বলে এই চশমা নাকি আমার আসল চেহারাটায় পাল্টে দিয়েছে,তা আদতে খারাপ হয়েছে নাকি ভালো তা বলা বাহুল্য।হাহা!!
এরপর বলতে পারি বৃষ্টির দিনের কথাগুলো,খুব রোমান্টিক মুডে প্রেমিকের সাথে বৃষ্টিবিলাস করতে গেলে দেখা যায় কিছুক্ষন পর প্রেমিক বেচারা আমার হাত ছেড়ে দিয়ে আমার চশমা মুছতে হয়।কি ভীষণ কষ্ট!!
আর এই করোনাকালের কথা কি বলব,মুখে মাস্ক পরে চোখে চশমা পরার মত বেদনা আর দুইটা হয়না, আমারই ত্যাগ করা কার্বন-ডাইঅক্সাইড বাষ্প হয়ে আমারই চশমার কাছে বিন্দু বিন্দু থেকে সিন্ধু হওয়ার চেষ্টা করে।মাঝেমধ্যে চলার পথে উষ্টাও খেতে হয় একারণে। কি ভয়ংকর এক্সপেরিয়েন্স উফ!!
আর রোদচশমা বা সানগ্লাসের ফ্যাশন কখনো করে দেখায় হয়নি।
যাই হোক,চশমার আবার একটা সুবিধাও আছে,আমাদের সমাজে যারা চশমা পরে তাদেরকে বেশ মেধাবী মনে করা হয়,তো একদম মেধাবী না হয়েও আমার মত অনেকেই এই সুযোগটা খুব উপভোগ করে।(যদিও কোনো লাভ কোনদিন হয়নি)
যাই হোক,চশমিশদের চশমা নিয়ে অনেক অনেক ভালো এবং প্রচন্ড দুঃখের গল্প আছে “যেমনঃঅনেককে বিভিন্ন কটুক্তি শুনতে হয় “তুমি চোখে দেখোনা,কানা,অন্ধ নাকি” এরকম অনেককিছু।অনেক ছেলে-মেয়েকে চিনি যাদের বিয়ে আটকে গিয়েছিল এই চশমা ব্যবহারের কারণে।
এই শতাব্দীতে এসেও চোখের পাওয়ার কমে যাওয়া নিয়ে যারা মানুষের মধ্যে খুঁত ধরে তাদেরকে আসলে মন থেকে শ্রদ্ধা করা যায়না,কারণ তারা চোখ থাকতেও অন্ধ।
পরিশেষে, চোখের যত্ন নিন,বেশি করে শাকসবজি খান,সুস্থ থাকুন,অযাচিত অতিথিকে নাকের ঢগায় আসা থেকে বিরত রাখুন।
More From Author
- None Found