বাবুমশাই

বাস্তবতা শুনবেন মশাই? এই তো আর কটা বছর। তারপর শুরু সবার পছন্দের কোনো সুপাত্রের সাথে আজীবন মানিয়ে চলার লড়াই। লড়াইটা আসলে নিজের সাথে।
যেমন ধরুন সে যদি খুব গুছিয়ে ভালবাসার কথা বলে আমার মনে হবে আপনার আধো আধো “ভালবাসি”-র মতো ঠিক নয়। কিংবা তার ভরাট কন্ঠে রুদ্রের কোনো গভীর প্রেমের কবিতা শুনে ভাববো আপনার রাত জাগা গান গুলোই ভালো ছিল।
আমার রাগ ভাঙাতে সে হয়তো এনে দেবে বাদল দিনের প্রথম কদমফুল। আমি কিন্তু তখনো ভাববো আপনি কি অবলীলায় কথা দিয়েই সব ভুলিয়ে দিতেন, আপনার এত্তসব আয়োজনের বালাই ছিল না।
হয়তো তার সাথে প্যারিসের রাস্তায় দাঁড়িয়ে অন্য করো প্রেমের সাক্ষী হব। কিন্তু তখনও বাড়ির পাশের সেই পুরনো গলির সামনে দিয়ে যাবার সময় পলকা হাসিতে চোখের কোণে জল চলে আসবে অজান্তেই; ফিরে যেতে ইচ্ছা করবে সেই আলগা সুখের দিনগুলােতে।
বছর কুড়ি পর জীবন ঝুড়িতে হয়তো অনেক সুখের মুহূর্ত জমা হবে। আমার সুখ তখনও আপনার কাছে পাওয়া স্বল্প সময়ে।
একটা সময় পর হয়তো আর স্বীকার করতে দ্বিধা থাকবে না যে, আমি অনবরত পালিয়ে বেড়াচ্ছি। উৎসব, আলাে, আনন্দের দিনগুলােতেও মন খুলে হাসতে গেলে জোর লাগছে।
জীবনব্যস্তায় দিনগুলো ঠিক পার হয়ে যাবে। কিন্তু নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত রাত গুলো অনেকটা দীর্ঘ হবে। প্রেম এত সহজে ফুরিয়ে যায় না, জানেন! যা ফুরিয়ে যায় তা হলো একটা রোজকার কথোপকথন, একটা অতি প্রিয় অভ্যাস।জীবন থেমে থাকে না মশাই। থেমে যায় মন,আটকে যায় স্মৃতির গোলক ধাঁধায়। আমিও ঠিক আটকে গেছি ঐ গুটিকয়েক মুহূর্তে।
কিছু না পাওয়া জীবনের অন্যসব প্রাপ্তির চেয়েও গুরুতর হয়ে থেকে যায়। পাশের মানুষটা আপনার মতো না, মানুষটা ঠিক আপনি না, এ আক্ষেপ যে আমার আজীবনের বাবুমশাই।
More From Author
- None Found